Advertisement

রাসেলের কাছে হেরেও জামাল শেষ আটে

অনলাইন ডেস্ক:

ফেডারেশন কাপে গ্রুপের শেষ দিনের খেলায় সামনে চলে আসে গোলের নানা হিসাব। শেখ রাসেল ৩-২ গোলে শেখ জামালকে হারিয়ে এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওঠে কোয়ার্টার ফাইনালে। শেখ জামাল হারলেও পুলিশের সঙ্গে ১ পয়েন্ট নিয়ে তারা ছিল রানার্স আপের দৌড়ে। কিন্তু দুই দলের গোল ব্যবধান সমান হলে বেশি গোল করার সুবাদে শেখ জামাল পৌঁছে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে। তার আগের ম্যাচে আবাহনী ২-১ গোলে মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে, রানার্স আপ মোহামেডান। 

আবাহনীর উত্তরণের মূল সূত্রধর মাসি সাইগানি। এক বছর বাদে তিনি ফিরলে দলের দুর্দশা বাড়ত বৈকি। কারণ খেলোয়াড় তালিকায় দুই ব্রাজিলিয়ানের নাম থাকলেও তাঁদের পায়ে লাতিন সুরভি নিয়ে বেশ সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ান লিগ খেলে আসা ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো রদ্রিগেজ দুই ম্যাচে গোলহীন। আরেক ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল সান্তোস পরশু মাত্র এসে পৌঁছেছেন। তাঁর পায়েও কতটুকু কী থাকবে বলা মুশকিল। এই কঠিন সময়ে ত্রাতা হয়ে এসেছেন মাসি সাইগানি। চেন্নাইয়ান এফসি ছেড়ে আসা এই আফগান ডিফেন্ডার প্রথম ম্যাচের মতো কালও মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে গোলের খাতা খুলেছেন। পরে হাইতিয়ান বেলফোর্টও যোগ করেন আরেক গোল। এই বিদেশির ঘাড়ে চেপেই এগারোবারের চ্যাম্পিয়নরা ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।

শুরুর ২০ মিনিট কিন্তু সমানে পাল্লা দিয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধা। অ্যাটাকিং থার্ডে তালগোল পাকিয়ে ফেলায় শেষমেশ কিছু মেলেনি। কিন্তু ৩০ মিনিটে আবাহনীকে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে এগিয়ে নেন মাসি। বক্সের বাইরে থেকে ‘মানব দেয়ালের’ পাশ ঘেঁষে তিনি নিখুঁত শটে জল ঢেলে দেন মুক্তিযোদ্ধার লড়াইয়ে। গোলই যেন খেলায় ফিরিয়ে আনে আবাহনীকে। পরের মিনিটে নাবিব নেওয়াজের সামনে গোলের হাতছানি থাকলেও এই দেশি ফরোয়ার্ড বাইরে মেরে নষ্ট করেন। এর মিনিট পাঁচেক বাদে তিনি আরো ন্যক্কারজনক মিস করেন। মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষককে পরাস্ত করেও বল জালে পাঠাতে পারেননি। রায়হানের লম্বা থ্রো-ইনে মাসির চমৎকার হেডটি দারুণ ফিস্ট করেন মুক্তিযোদ্ধা গোলরক্ষক নুর হোসেন।

৬৯ মিনিটে আরেক সেটপিসে আবাহনী ব্যবধান দ্বিগুণ করে। নাবিব নেওয়াজের কর্নার কিকে বেলফোর্ট লক্ষ্যভেদ করলে মুক্তিযোদ্ধার ম্যাচে ফেরার সুযোগ কমে আসে। তবে লড়াই করে গেছে তারা শেষ পর্যন্ত। তাতে মিলেছে গোলের সুফল। ৮৪ মিনিটে জাপানি কাতোর হেড দুর্দান্ত সেভ করার মিনিট তিনেক বাদে শহীদুল আলম তাঁর চিরাচরিত ভুল করে বসেন। ফ্রি কিক ফ্লাইট মিস করলে রোহিত সরকার সহজেই বল জড়িয়ে দেন আবাহনীর জালে।

শেখ জামাল ধানমণ্ডির বিপক্ষে দিনের অন্য ম্যাচটি শুরু হয় শেখ রাসেলের আধিপত্যে। তার সুফল মেলে ৬ মিনিটে, বখতিয়ারের কর্নার কিকে তাজিক ডিফেন্ডার আসরোভের হেডে এগিয়ে যায়। ৩৫ মিনিটে সেই গোল ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেলেও গাম্বিয়ান সুলাইমান সিলার শট ঠেকিয়ে দেন রাসেল গোলরক্ষক আশরাফুল রানা। মিনিট চারেক বাদে ওবি মোনেকের দুর্দান্ত এক গোলে রাসেল ২-০ গোলের লিড নেয়। মাঝমাঠ থেকে বলটি ধরে এই নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার ডিফেন্ডার রেজাউলকে ছিটকে দূরের পোস্টে বল পৌঁছে দেন।

প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে একটি গোল ফেরত দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল শেখ জামাল। সুলাইমান সিলার সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে গাম্বিয়ান সলোমন কিং বাঁ পায়ে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন। গোলরক্ষক রানা পরাস্ত হলেও জামালের গোল ঠেকিয়ে দেয় গোলপোস্ট। শেষমেশ ৪৮ মিনিটে সলোমন কিংয়ের পেনাল্টিতে গোল। দিদারুল ফাউল করেছিলেন ওতাবেককে। ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকে শেখ জামাল, তবে স্কোরলাইন এভাবে থাকলে গোল বেশি করার সুবাদে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে তারা কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। গোলের অঙ্কে তাদের লড়াই চলছিল পুলিশের সঙ্গে। দুই দলেরই সংগ্রহ ১ পয়েন্ট করে। তাই গোলের লড়াই মুখ্য হয়ে ওঠে, সেখানে ৬০ মিনিটে শেখ রাসেলের তকলিছের গোলে সেই লড়াই ভেস্তে যেতে বসেছিল। স্কোরলাইন ৩-১ মানে পুলিশ গোলগড়ে এগিয়ে থেকে চলে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে। অর্থাৎ আরেক গোল লাগবে জামালের। সেই গোল খুঁজতে গিয়ে একের পর এক পোস্টে মেরেছেন গাম্বিয়ান ওমর জোবে ও উজবেক ওতাবেক। শেষ মুহূর্তে গোলরক্ষক আশরাফুল রানা জামালের ওমার জোবেকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায়। সুবাদে সলোমন কিংয়ের দ্বিতীয় পেনাল্টি গোলে শেখ জামাল ৩-২ ম্যাচ হেরেও পৌঁছে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে।

Post a Comment

0 Comments