অনলাইন ডেস্ক:
করোনার সংক্রমণ রোধে চলতি বছরই দেশে আসছে দেশি-বিদেশি টিকা। এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আসছে। এটি আগামী ২৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছবে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে এই টিকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে অনলাইন নিবন্ধন। কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা।
যার প্রথম চালান হিসাবে ৪ লাখ ডোজ ফাউজার বায়োএনটেক টিকা আগামী মার্চে পৌছাতে পারে। এদিকে দেশে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল পরিচালনার জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে।
দুটি প্রতিষ্ঠানের ট্রায়াল বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। এগুলোর পাশাপাশি বেসরকারিভাবে টিকা এনে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে বিক্রির অনুমতি চেয়েছে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠান সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমেদ কায়কাউস মন্ত্রিসভার বৈঠকে জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষের দিকে করোনা প্রতিরোধের সিরামের ভ্যাকসিন দেশে আসবে। রোববার ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে তারা বৈঠক করছেন। ওই বৈঠক থেকেই জানা গেছে, এ মাসের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
এ প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা ড. মোশতাক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত যে টিকাই দেশে আসবে সেটিই ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি ট্রায়ালের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। কারণ ট্রায়াল পরিচালনা করলেই বোঝা যাবে কোন টিকাটি আমাদের জন্য বেশি উপযোগী। তাছাড়া ট্রায়াল পরিচালনা করলে টিকার প্রাপ্তি সুবিধাজনক হবে। এমনকি বেসরকারি পর্যায়ে কেউ টিকা দিলে তা ইতবাচক হিসেবে দেখতে হবে। কারণ টিকা গ্রহণের মাধ্যমে একজন নিজে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন, পাশাপাশি অন্যকে সংক্রমিত করবেন না। এমনকি যদি সংক্রমণের শিকার হনও তাহলে সেটি হবে মৃদু সংক্রমণ।
টিকা প্রাপ্তি বিষয়ে সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, বেক্সিমকো ফার্মা আমাদের জানিয়েছে, আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি মধ্যে এই টিকা বাংলাদেশে আসবে। টিকা আসার পর দুই দিন বেক্সিমকোর ওয়্যারহাউসে থাকবে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের ব্যবস্থাপনায় টিকা পৌঁছানো হবে। অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গত নভেম্বরে যে চুক্তি হয়েছিল, তার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।
সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকার ‘ডিস্ট্রিবিউটর’ হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা সরবরাহ করবে। এই টিকা প্রত্যেককে দুই ডোজ করে দিতে হয়। সে কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রথমে পরিকল্পনা করেছিল, প্রথম চালানের ৫০ লাখ টিকার অর্ধেক ২৫ লাখ মানুষকে দিয়ে তাদের দ্বিতীয় ডোজের জন্য বাকি টিকা সংরক্ষণ করা হবে। তবে সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার নতুন তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ডোজ দেওয়ার ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে। সে কারণে প্রথম চালানে পাওয়া টিকা প্রথম মাসেই একসঙ্গে ৫০ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এর আগে আমাদের জানানো হয়েছিল, প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। সে হিসেবে প্রথমে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গতকাল নতুন নিয়ম জানার পর আমরা পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছি।
এ সময় অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ’র লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে টিকা পৌঁছবে ২৭ জানুয়ারি। কয়েকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হবে। এক সপ্তাহ পর, মাঠ পর্যায়ে টিকা দেওয়া শুরু হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে ৮ সপ্তাহ ব্যবধানে (১ম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ) ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। টিকা পাওয়ার পর প্রথম ধাপেই দেওয়া হবে কোভিড প্রতিরোধে সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের।
প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেউ যদি ২ ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছুক হন তবে তাকে অবশ্যই ২ ডোজের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান নির্ধারিত ৮ সপ্তাহ দেশে অবস্থান করতে হবে। এক্ষেত্রে তাকে বৈধ কাগজপত্রাদি (পাসপোর্ট, ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি) দাখিল করতে হবে।
ভ্যাকসিন পরিবহণ, সংরক্ষণ ও দেওয়ার সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা দেবে। ভ্যাকসিন বিষয়ক সরকারি প্রচার-প্রচারণা নিশ্চিত করতে তথ্য মন্ত্রণালয় সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন নিবন্ধন, ভ্যাকসিন কার্ড, সম্মতিপত্র, ভ্যাকসিন সনদ প্রদানে আইসিটি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের ‘সুরক্ষা ওয়েবসাইট’ প্রস্তুত করা হয়েছে।
লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেন, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যাল লিমিটেডের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি বা তার অধিক ডোজ ক্রয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বিশ্বের ৯২টি দেশের মতো বাংলাদেশ মোট জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ জনগোষ্ঠী তথা ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে। দেশে প্রদেয় অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ইউকে রেগুলারেটি অথরিটির অনুমোদন লাভ করে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি এক্সপার্ট কমিটি ৭ জানুয়ারি ২০২১ ওই ভ্যাকসিনকে ‘ইমার্জেন্সি ইউস অথরাইজেশন প্রদান করে। এতে করে দেশে ওই ভ্যাকসিন ব্যবহারে আর কোনো বাধা নেই। এছাড়া নকল ভ্যাকসিন প্রতিরোধেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টের নির্দেশনা ও দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদানের অগ্রাধিকার নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারণ করে যথাযথভাবে সংরক্ষণের জন্য দেশের সব জেলা ও সিটি করপোরেশনের ইপিআই স্টোরসমূহকে ইতোমধ্যেই চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৩ কোটি বা ততধিক ডোজ ভ্যাকসিন ৬টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই কোল্ড স্টোরসমূহে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ঔষধ প্রশাসনের অধীনে এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
যেসব স্থানে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে : উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/ সদর হাসপাতাল, সরকারি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ, বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। সারা দেশে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি ভ্যাকসিন দল এই কাজ করবে। ভ্যাকসিন দানকারী হিসেবে থাকবে ২ জন নার্স, স্যাকমো, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে থাকবে ৪ জন।
তিনি আরও জানান, ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী নারীদের টিকা দেওয়া হবে না। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার পর এসএমএস করে টিকা নেওয়ার দিন ও সময় জানানো হবে। করোনার টিকা নেওয়ার আগে একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে। কারণ যাকে টিকা দেওয়া হবে তার একটা অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। আমরা একটি সম্মতিপত্র তৈরি করেছি। সেখানে রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ, পরিচয়পত্র এবং নাম থাকবে। সম্মতিপত্রে লেখা থাকবে ‘করোনার টিকা’ সম্পর্কে আমাকে অনলাইনে এবং সামনাসামনি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই টিকা গ্রহণের সময়, অথবা পরে যে কোনো অসুস্থতা, আঘাত বা ক্ষতি হলে, তার দায়ভার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বা সরকারের নয়।
আমি সম্মতি দিচ্ছি যে, টিকা গ্রহণ ও এর প্রভাব সম্পর্কিত তথ্যের প্রয়োজন হলে আমি তা প্রদান করব। জানা মতে, আমার ওষুধজনিত কোনো অ্যালার্জি নেই। টিকা গ্রহীতাকে আরও সম্মতি দিতে হবে যে, ‘টিকাদান পরবর্তী প্রতিবেদন অথবা গবেষণাপত্র তৈরির বিষয়ে অনুমতি দিলাম। আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে এই টিকার উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অবগত হয়ে টিকা গ্রহণে সম্মত আছি। এই সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে এবং এটা সরকারের কাছে সংরক্ষিত থাকবে।’
এদিকে কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় আগামী মার্চ মাস থেকে জুন মাসের মধ্যে আসছে ফাইজার-বায়োএনটের টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুক্রবার বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী কিনা সেটি জানতে চায়।
এক্ষেত্রে বাংলদেশের বক্তব্য আগামী ১৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফাইজার-বায়োএনটেক উৎপাদিত ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থার খোঁজ নেন। কারণ এই ভ্যাকসিন হিমাঙ্কের নিচে ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। ইতোমধ্যে এই টিকা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে দেশে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল করতে আগ্রহী এমন তিনটি প্রতিষ্ঠান তাদের সিআরও সম্পন্ন করে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল অনুমোদন দিলেই শুরু হবে ট্রায়াল। এই তালিকায় রয়েছে দেশীয় একমাত্র ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিগগিরই হয়তো তারা এই অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। তবে তাদেরটি অবশ্য প্রথম ধাপের হিউম্যান ট্রায়াল।
এছাড়া চীনের সরকারি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজি চায়না একাডেমি মেডিকেল সায়েন্স’ এ দেশে টিকার ট্রায়াল করতে আগ্রহী। তাদের হয়ে একটি দেশীয় ওষুধ কোম্পানি আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করে বিএমআরসিতে আবেদন করেছে। এই টিকা চায়নায় ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইতোমধ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া একাধিক দেশেও এটির ট্রায়াল পরিচালিত হচ্ছে।
একইভাবে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতের রাষ্ট্রীয় ভ্যাকসিন উৎপানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ভারত বায়োটেক’। এই দুটি প্রতিষ্ঠানই ট্রায়াল পরিচালনার জন্য দেশের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এছাড়া ট্রায়ালের বিষয়ে আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে চায়নার আরও একটি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘অনহুই জিফেই লংকম বায়োমেডিকেল’ এবং বহুজাতিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’।
এছাড়া দেশের সম্পদশালী জনগোষ্ঠীকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তি দিতে তৎপর বেসরকারি বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি। রাশিয়ার উৎপাদিত অত্যাধুনিক স্পুটনিক-ভি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজারের টিকা বেসরকারি পর্যায়ে দেশে এনে বিক্রি করতে অনুমোদন চেয়েছে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে যে ভ্যাকসিন আসবে সেটি প্রথম ধাপের প্রথম পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত মোট জনগোষ্ঠী ৮ দশমিক ৬৮ ভাগ মানুষকে প্রদান করা হবে। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীরা (চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী) পাবেন ৪ লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন।
বেসরকারি পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা পাবেন ৬ লাখ। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে পাবেন ২ লাখ ১০ হাজার, সম্মুখসারির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পাবেন ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৯ জন, সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর পাবেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন, রাষ্ট্র পরিচালনা অপরিহার্য সরকারি কর্মচারী পাবেন ৫০ হাজার জন, সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী পাবেন ৫০ হাজার জন, বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা পাবেন এক লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন।
সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মীদের মধ্যে পাবেন দেড় লাখ, মৃতদেহ সৎকার কর্মীদের মধ্যে পাবেন ৭৫ হাজার জন, জরুরি পানি, গ্যাস ও পয়ঃনিষ্কাশন কাজে নিয়োজিতদের মধ্যে পাবেন ৪ লাখ জন, স্থল-নৌ-বিমানবন্দরকর্মী দেড় লাখ জন, প্রবাসী অদক্ষ কর্মী এক লাখ ২০ হাজার, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জরুরি সেবায় নিয়োজিত ৪ লাখ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী ৬ লাখ ২৫ হাজার জন।
এছাড়া আশি বছরের ঊর্ধ্ব ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন, ৭৭ থেকে ৭৯ বছর ১১ লাখ ৩ হাজার ৬৫৩ জন। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা পাবেন ২১ হাজার ৮৬৩ জন। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনের জন্য রাখা হবে ৭০ হাজার ডোজ টিকা।
– যুগান্তর
0 Comments