বিশেষ প্রতিবেদক:
বিশ্বের পর্যটন নগরীর যানজট কক্সবাজার বাসীর নিত্য দিনে সঙ্গী। তবে রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল ও অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ে এ দুঃসহ যানজট যেন দিন দিন বেড়েই চলছে। কর্তৃপক্ষের বার বার হুশিয়ারি বা অনুরোধ সত্ত্বেও কিছুতেই কমছে না অবৈধ গাড়ি পার্কিং। ফলে যানজট আরো তীব্র হচ্ছে।কক্সবাজার থেকে চট্রগ্রাম ব্যস্ত সড়কগুলোর দুই পাশে প্রতিদিন অসংখ্য গাড়ি দিনভর পার্ক করে রাখা হয়। ফলে এই এলাকার যাতায়াতকারীদের প্রতিনিয়তই পড়তে হয় যানজটে। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত একই অবস্থা বিরাজ করে।কক্সবাজারসহ আশেপাশের এলাকার প্রতিটি সড়কের দুই দিকে একই অবস্থা। প্রতিটি গাড়ি দুই থেকে তিন ঘণ্টা রাস্তা দখল করে রাখছে। কোনো কোনো গাড়ি সকালে কর্মকর্তাকে নামিয়ে বিকেলে অফিস ছুটি পর্যন্ত রাস্তায় থাকে।ইতি মধ্যে
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ শহরের বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী পর্যন্ত বাইপাস সড়কের চার লেনের কাজ প্রায় শেষ করতে চলেছে। এতে সড়কটি বড় হওয়ায় বাইপাস রোডের দুই পাশে প্রতিদিন শতাধিক গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। ফলে বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী পর্যন্ত যানজট নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে
রাস্তা দখল করে যানবাহন রাখার কারণে পথচারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটতেও পারেন না। এই নানান সমস্যার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কক্সবাজারের বাসিন্দা ও বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমনে আসা পর্যটকরা। প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। গত কয়েকদিন আগেও এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় দু'জন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার অফিস শেষে প্রতিদিন বাংলাবাজার বাসায় ফিরেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মামুন। যানজটের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কক্সবাজারে যানজটে যে সময় ব্যয় হচ্ছে, অন্য দেশে বিমানে করে পাশের দেশে যাওয়া যায়,শুধু তা নয় ফিরেও আসা সম্ভব।তিনি আরো বলেন, এই এলাকায় যানজটের প্রধান কারণ রাস্তায় গাড়ি পার্কিং। রাস্তার দুই ধারে প্রাইভেট কার পার্কিং করায় এ যানজটের সৃষ্টি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বহন করা বাসও পার্কিং করা থাকে এখানে, যা যানজটের মূল কারণ। মামুনের মতো আরেক ভুক্তভোগী বেসকারি চাকুরিজীবী আনিস। তিনিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ব্যস্ততম এই রাস্তার দুইপাশেই লাইন ধরে রাখা হয়েছে ব্যক্তিগত যানবাহন। নিয়ম অনুযায়ী অবশ্য এসব যানবাহন থাকার কথা বহুতল ভবনগুলোর কার পার্কিংয়ে। কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কারো দৃষ্টি না থাকায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।এদিকে,কক্সবাজারে পেট্রোল পাম্প মোড়ে থেকে প্রায় লিংক রোড় পর্যন্ত রাস্তা দখল করে বাস পাকিং করে রাখা হয় । যার কারণে প্রতিদিন তীব্র যানজোটের পড়তে হয় এই এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষদের।সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,কক্সবাজার শহরে লিংক রোড় মোড় থেকে সাড়ি করে রাস্তায় রাখা হয়েছে যাত্রীবাহী বাস। বিশেষ করে কলাতলী মোড় ও বাসটার্মিনালে বাসগুলোর সিরিয়াল রক্ষার্থেই ব্যস্ত এই রাস্তা দখল করে পার্কিং করা হয়েছে। ফলে অসহনীয় যানজটের পড়ছে সাধারণ মানুষ।জানতে চাইলে পার্কিং করা একাধিক বাসের চালক জানান, আমরা রাস্তার এক পাশে বাস পার্কিং করে ট্রিপ মারার জন্য সিরিয়াল করে রেখেছি। রাস্তায় ছাড়া কোথায় রাখবো? আমরাও তা বুঝি, কিন্তু আমাদের বাস রাখার আর কোনো জায়গা নেই, তাই বাধ্য হয়েই এখানে রাখতে হয়েছে।কক্সবাজার কলাতলী মোড়ে প্রাইভেট কার রাস্তায় পার্কিং করার সময়ে চালক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কক্সবাজার শহরে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়েই রাস্তার ওপর গাড়ি রাখতে হচ্ছে।তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার পর্যটন নগরীর মতো বাণিজ্যিক এলাকার বেশির ভাগ ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ফলে দিনের বেলা ওই দুই এলাকায় অধিকাংশ ভবনের সামনে রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা এই এলাকার যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ।
0 Comments