আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা পদক্ষেপের পরও থামছে না ইয়াবা প্রবেশ। অথচ ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে তালিকাভুক্ত এবং এর বাইরে থাকা মাদক কারবারিরা আটক হয়েছে। কিন্তু অধরা থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ ইয়াবার নেপথ্য নায়করা। নানা কৌশলে তারা মাদকের এ অবৈধ ব্যবসা জিইয়ে রেখেছে। তারই একজন কক্সবাজার সদর পশ্চিম চৌফলদন্ডী ৩ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি মেম্বার রাসেল। রাসেলের থেমে নেই মহামারী করোনার মধ্যেও পুরোদমে নির্ভয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মরণ নেশা ইয়াবা।
চৌফলদন্ডী এলাকায় মাদকের জাল ছড়িয়ে রেখেছে মেম্বার রাসেল ও তার সিন্ডিকেট। টেকনাফের বিভিন্ন চোরাই পথ ব্যবহার করে পাশ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে মাদক নিয়ে আসে মেম্বার রাসেল তার সিন্ডিকেট।তার সিন্ডিকেটে এক সদস্য মাদক মামলায় দীর্ঘ একবছর খেটে তাকে জেল থেকে বের করে ফের সংঙ্খিয় হয়ে তুলেন।রীতিমতো চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা।
টেকনাফ থেকে নদী পথে বিপুল ইয়াবা এনে তা পাচার করে অঢেল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেল মেম্বার রাসেল।সদরে ইয়াবা রাজ্যে এখন আন্ডার ওর্য়াল্ডের ডন চৌফলদন্ডীর রাসেল। এক সময়ে ভবঘুরের ফেরারী মাঁঝি এখন বিলাস বহুল রঙ মহলেসহ কোটি কোটি টাকার মালিক,ঘরে বসে নিয়ন্ত্রণ করছেন ইয়াবার জগত।
তার সিন্ডিকেটের সদস্য একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। প্রতিবারই তার কোটি টাকার ফাঁকফোকর দিয়ে ছাড়া পেয়ে পুণরায় ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
মেম্বার রাসেল রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইয়াবাসহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
চৌফলদন্ডী এলাকা ছাড়িয়ে পুরো সদরে প্রতিটি অপকর্মেই তার হাত রয়েছে।তার কারণে এলাকার সমাজ ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। এমন গুরুত্বর আঙুল তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায়, চাঁদাবাজি, ইয়াবা পাচার, মানব পাচারসহ নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে। বিশেষ করে সমাজের খারাপ ও কতিপয় যুবক-যুবতী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ব্যবহার করে মুলত এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে সে।
তার কারণে পুরো এলাকাবাসী এখন ভীত সন্ত্রস্ত্র। এলাকায় তার ক্ষমতার প্রভাব এতই বেশি- সাধারণ লোকজন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না
মেম্বার রাসেলের মতো ইয়াবা গডফাদারা গোয়েন্দা সংস্থা ও রাষ্ট্রের কালো তালিকা ভুক্ত ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনিক কার্যালয় সর্বত্র মহড়া দিয়ে নানান অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ও উঠেছে।
অসংখ্য পাচারকারীর পৃথক পৃথক সিন্ডিকেট ছাড়াও তার রয়েছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পরিচয়ী কিছু দুর্বৃত্ত, অসাধু জনপ্রতিনিধি। এসব বাহিনীর অপশক্তি ব্যবহার করে মিয়ানমার হতে হাজার হাজার ইয়াবা এনে সারা দেশে সরবরাহ করে রমরমা বাণিজ্য গড়ে তোলে।
প্রাপ্ত তথ্য জানা য়ায়,সম্প্রতি সময়ে পাচারের সময় চৌফলদন্ডী ব্রিজ হতে ৫০লাখ পিস ইয়াবার কেলেঙ্কারির ঘটনায় চোর-পুলিশ খেলা নিয়ে এলাকায় আত্মপ্রকাশ পাই মেম্বার রাসেল।
সূত্র জানায়, তার নেতৃত্বে ১০/১২টি স্পটে প্রকাশ্যে চলছে বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের কেনা-বেঁচা। শুধু ব্যবসাতেই সে ক্ষান্ত নয়। এসব স্পটে মেম্বার রাসেলের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা মাদক সেবন ও সরবরাহ করছে দাপটের সাথে।এতে চরম উৎকন্ঠা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সচেতন অভিভাবকরা।
আগে তার কিছুই ছিলনা। কিন্তু ইয়াবার বদৌলতে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে রাসেল। তার রয়েছে প্রচুর অর্থ সম্পদ। শহরের বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে জায়গা ক্রয় করছে। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য গাড়ি।
তার চলমান ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করতে এলাকার সুশীল সমাজ প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি ধমকি দেন প্রতি মুহূর্তে। গত কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কয়েকবার এলাকায় লোকজনদের অস্ত্র মহড়া দিয়ে হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।তাদের সাঙ্গ পাঙ্গদের অস্ত্র মহড়ার কারনে এলাকায় মুখ খোলতে নারাজ অনেকে। তাদের সংঘবদ্ধ একটি দল সবসময় মোটরসাইকেল ও অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করে তাই তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলেনা।
এদিকে মেম্বার রাসেলের অবৈধ পন্থায় করা বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, একাধিক নানান মডেলের যানবাহন গড়ার বিষয়টি এখন এলাকায় আলোচ্য বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
অভিযুক্ত ইয়াবা গড় ফাদার মেম্বার রাসেল কালো টাকা ও তার পেশী শক্তির প্রভাবে নিরাপদে চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধানে জানা যায় ইউপি মেম্বার হওয়ার পর থেকে কালো জগতে নাম লেখাতে বেগ পেতে হয়নি তার। তাই রাতারাতি বড় লোক হওয়ার স্বপ্নে জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসায়। বিভিন্ন কায়দায় মাদক পাচার করত সে। কখনও মোটরসাইকেলে আবার কখনও পায়ে হেটে আগে থেকে ঠিক করা স্পটে আসক্তদের মাদক পৌছে দেয় রাসেল নিজ হাতে ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। লেনদেন হয় বিকাশের মাধ্যমে। দুপুর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত রমরমা ব্যবসা চলে।রাসেলের সিন্ডিকেটের উঠতি বয়সী কয়েকজন যুবক এসব স্পটে মটরসাইকেল করে প্রশাসনের আনাগোনা লক্ষ রাখে।
এদিকে আরও জানা গেছে, সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর যেসব মাদক ব্যবসায়ী আত্মগোপনে ছিল, তাদের অনেকে এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। পুরনো গডফাদারদের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন গডফাদার। যাদের নাম কোনো তালিকায় নেই।
তাকে শিঘ্রী আইনের আওতায় এনে কক্সবাজার সদর চৌফলদন্ডীকে ইয়াবা কলঙ্কমুক্ত করা হউক এবং ছোটবড় সকল সিন্ডিকেট সদস্যদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল। চলবে......
0 Comments