Advertisement

মেসির নৈপুণ্যে কোয়ার্টারে আর্জেন্টিনা

মরুর বুকে বিশ্বকাপের মঞ্চে মেসির রেকর্ডময় দিনে কোয়ার্টার ফাইনালও নিশ্চিত করল হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা। 'সি' গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউটের টিকিট পায় আলবিসেলেস্তেরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে লিওনেল স্ক্যালোনির দল হেসেখেলেই জয় পেয়েছে। ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসি নিজের ১০০০তম ম্যাচটি রাঙাতে ভুল করেন নি। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে এই আর্জেন্টাইন এবারের বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় গোলের দেখা পেয়েছেন। মেসি বোঝালেন কেন তাকে বিশ্বসেরা খেলোয়াড় বলা হয়। বোঝালেন কেন তিনি এবারের বিশ্বকাপ জিততে এসেছেন। একক নৈপুণ্য দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারালো আর্জেন্টিনা। উঠে গেলো কোয়ার্টার ফাইনালে৷ দোহার আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) শেষ ষোলর লিওনেল মেসি ও ইউলিয়ান আলভারেজের গোলে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে লিওনেল মেসির গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান ইউলিয়ান আলভারেজ। ৭৬ মিনিটে এনজো ফার্নান্দেজের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান কমায় অস্ট্রেলিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের মোকাবেলা করবে আর্জেন্টিনা। এদিন খেলার শুরুতেই গোল পেতে পারত আর্জেন্টিনা। ৩ মিনিটের মাথায় পাপু গোমেজের শট হাতে লাগলে অস্ট্রেলিয়ার ডিবক্সে হ্যান্ডবলের আবেদন করে আর্জেন্টিনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেয়নি। ১৬ মিনিটে পাপু গোমেজ উড়িয়ে মারলে নষ্ট হয় সুযোগ। ১৮ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার আজিজ বেহিখ বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন আর্জেন্টিনার ডিবক্সে। তবে ডিফেন্ডারদের চেষ্টায় বিপদমুক্ত থাকে গোলপোস্ট। ২৩ মিনিটে কর্নার পায় অস্ট্রেলিয়া। ২৬ মিনিটের মাথায় অস্ট্রেলিয়ার আরও একটি আক্রমণ নষ্ট হয় আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের দৃঢ়তায়। ২৮ মিনিটে কর্নার থেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন মলিনা। ৩০ মিনিটের সময় রায়ান ম্যাকগ্রিকে মলিনা ফেলে দিলে ফ্রি কিক পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে দূর থেকে নেওয়া ফ্রিকিকে কোন বিপদ হয়নি আর্জেন্টিনার। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডেডলক ভাঙেন হাজারতম ম্যাচ খেলতে নামা আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্সিভ ফুটবলের কারণে তাদের রক্ষণভাগে তেমন প্রভাব রাখতে পারছিল না আলবিসেলেস্তেরা। তবে লিওনেল মেসির জন্য তো একটু যায়গাই যথেষ্ট। সুযোগটা পেয়েই কাজে লাগিয়ে দলকে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক পা এগিয়ে দেন তিনি। ৩৩ মিনিটে পাপু গোমেজকে ফাউল করা হলে বা প্রান্ত থেকে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির দারুণ ফ্রি-কিক ডিবক্সে বাঁধা পেলেও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডাররা। ডি বক্সের জটলায় বল পেয়ে দারুণ প্লেসিং শটে গোল করেন মেসি। এটি বিশ্বকাপে মেসির নবম গোল। এই গোলে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন ছিয়াশি বিশ্বকাপের নায়ক ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে। আর এক গোল পেলেই ছুঁয়ে ফেলবেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোল করা আর্জেন্টাইন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। ৫০ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে মেসির শট সহজে থামান সকারু গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। ৫২ মিনিটে অল্পের জন্য গোল হজম করতে হয়নি আর্জেন্টিনার। ডিফেন্ডার ও এমি মার্টিনেজের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝিতে বল পেয়ে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড। তবে বলে স্পর্শ করার ঠিক আগে বল ক্লিয়ার করেন এমি। ৫৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। এবার নায়ক আগের ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় গোল করা ইউলিয়ান আলভারেজ। অস্ট্রেলিয়ান গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান বল দিয়েছিলেন তার বাঁয়ে থাকা ডিফেন্ডারকে। কিন্তু আর্জেন্টাইনদের প্রেসিংয়ে তিনি ব্যাকপাস দেন রায়ানকে। এ সময়ে বলের পেছনে ধাওয়া করছিলেন আলভারেজ। রায়ান বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তুলে দেন তার পায়ে। ফাঁকা পোস্টে গোল করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ২২ বছর বয়সী ম্যানসিটি তারকার। শেষ ছয় ম্যাচে এটি তার চতুর্থ গোল। ৬৫ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে উড়িয়ে মারেন মেসি। ৭০ মিনিটে আলভারেজকে তুলে লাউতারো মার্টিনেজকে নামান কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি।

Post a Comment

0 Comments